Blogger Templates

Wednesday 18 January 2017

পেনড্রাইভ দিয়ে লিনাক্স ইন্সটল পদ্ধতিঃ

পেনড্রাইভ দিয়ে লিনাক্স ইন্সটল পদ্ধতিঃ


প্রথমেই বলে রাখি লিনাক্স কি ? অনেকেই বলে লিনাক্স একটি অপারেটিং সিস্টেম । কিন্তু সত্য কথা হল লিনাক্স কোন অপারেটিং সিস্টেম না । লিনাক্স হল কার্নেল । অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কার্নেল আর অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য কি । অপারেটিং সিস্টেমকে সফটওয়ার বলা যেতে পারে যা অন্যান্য সফটওয়ার ব্যবহারের সুবিধা করে দেয় । অন্যদিকে কার্নেল হল অপারেটিং সিস্টেমেরই একটা অংশ যা হার্ডওয়ারের সাথে সফটওয়ারের যোগাযোগ রক্ষা করে। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা হয়ত একটু সহজ হবে আমরা যে উইন্ডোজ ৭, ৮ ব্যবহার করি এইগুলো কার্নেল হল উইন্ডোজ এনটি আর উবুন্টু , মিন্ট এইগুলা হল অপারেটিং সিস্টেম । লিনাক্স হচ্ছে তাদের কার্নেল। আশা করি ব্যাপারটা বুঝা গিয়েছে ।

এখন বলব লিনাক্সের ডিস্ট্রো নিয়ে । এইটা নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই । সোজা বাংলায় লিনাক্সের কার্নেল ব্যবহার করে যে সব অপারেটিং সিস্টেম গড়ে উঠে তাই লিনাক্স ডিস্ট্রো। আর যখন যখন কার্নেলের সাথে অনেক সফটওয়্যার যোগ করা হয়, তখন তা পরিণত হয় একটি ডিস্ট্রিবিউশনে। যেমনঃ ফায়ারফক্স ওপেন অফিস সব কিছু মিলেই কিন্তু উবুন্টু ডিস্ট্রিবিউশন।

এইবার আসি লিনাক্স ইন্সটল পদ্ধতি । লিনাক্স অনেক ভাবেই ইন্সটল করা যায় । আপনি চাইলে উইন্ডোজের সাথে ডুয়েল বুট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন । আবার চাইলে ভার্চুয়াল মেশিনে ইন্সটল করতে পারেন কিংবা আপনার ছোট পেনড্রাইভে ও।

এইখানে আমি কিভাবে আপনি ডুয়েল বুট হিসেবে উবুন্টু অথবা লিনাক্সে কোন ডিস্ট্রো ব্যবহার করতে পারেন তা বলব । বাকী ইন্সটলেশান পদ্ধতিগুলো ধারাবাহিক ভাবে আসবে। বলে রাখা ভাল , ডুয়েল বুটে লিনাক্স ইনস্টল করার পক্ষপাতী আমি না। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে উইন্ডোজের পাশাপাশি ব্যবহার করতে চাইলে ভার্চুয়াল মেশিনই বেটার।

লিনাক্স ইনস্টলেশানের সময় আরেকটি কমন প্রশ্ন হল এইটি সেট আপের জন্য কতটুকু জায়গা লাগবে। সত্য কথা বলতে কি লিনাক্স চাইলে আপনি আপনার ৮ জিবি পেনড্রাইভে ও ইনস্টল করতে পারেন । তবে ভাল পারফরম্যান্সের জন্য আমি বলব ৩০ জিবি থাকা উত্তম । তাহলে আপনি লিনাক্সের পুরো সুবিধাটুকু আদায় করে নিতে পারবেন।

প্রথম পদ্ধতিঃ
বাজার থেকে সিডি এনে সরাসরি ইনস্টল পদ্ধতি। যদিও এইটা অনেক ধীর পদ্ধতিতে কাজ করে । অনেক সময়সাপেক্ষ । কিন্তু আপনি চাইলে এইভাবে সহজে ইন্সটল দিতে পারেন।

দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ
বুটেবল পেনড্রাইভ দিয়ে ইন্সটল । এইজন্য আপনাকে প্রথমে লিনাক্সে যে কোন একটি ডিস্ট্রো পছন্দ করতে হবে। তারপর সেই সাইট থেকে .iso ফাইলটি ডাউওলোড করুন । এইবার হবে বুট করার পালা , বুট করার জন্য unetbootin অথবা universal-usb-installer যে কোন একটি সফটওয়ার নামিয়ে নিন । আমি যেহেতু universal-usb-installer দিয়ে করেছি। তাই আমি সেইটা দিয়েই দেখাব । তবে অন্যটি নিয়েও কেউ কোন সমস্যায় পড়লে উত্তর দিতে চেষ্টা করব। এইবার পেনড্রাইভটি পিসি অথবা ল্যাপটপের সাথে লাগিয়ে নিন আর নিচের চিত্রের মত সব কিছু সিলেক্ট করুন।

এখন প্রশ্ন হল লিনাক্স ইন্সটলের জন্য তো ড্রাইভ দরকার কি করব ??? এইটা তেমন কোন সমস্যায় না । ড্রাইভ পার্টিশান করবেন । সিম্পল । আপনি চাইলে ম্যানুয়েলি ও করতে পারেন আবার থার্ড পার্টি সফটওয়ার দিয়ে ও করতে পারেন। থার্ড পার্টি সফটওয়ারের জন্য আমার সাজেশন  EaseUsPartition-manager সফটওয়ারটি। এইটি দিয়ে আপনি যে কোন ড্রাইভকে রিসাইজ রিমুভ করে ড্রাইভ খালি করুন । (সফটওয়ারটি ব্যবহার সম্পর্কে না জানলে টিউমেন্টে জানান।)
আমরা এখন আসল কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। রিস্টার্ট দিন কম্পিউটার। এখন আপনার BIOS সেট আপে গিয়ে ফ্ল্যাশ ড্রাইভ সিলেক্ট করুন । এর পরের বাকী কাজ গুলো আপনি দেখলেই বুঝতে পারবেন ।

লিনাক্স ইন্সটলের সময় একমাত্র পার্টিশন অপশনে গিয়েই আপনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন । যারা হয়ত টুকিটাকি উইন্ডোজ ইন্সটল করেছেন তাদের হয়ত সমস্যা হবে না কিন্তু যারা নতুন তারা অবশ্যই এইখানে সমস্যায় পড়বে । আর হ্যা এইখানে একটা ভুলেই কিন্তু আপনার সাধের উইন্ডোজের ১২টা বাজানোর জন্য যথেষ্ট। পার্টিশানে গিয়ে প্রথমেই আপনার বাছাইকৃত ড্রাইভটি সিলেক্ট করুন।  ড্রাইভ লেটার নেই ? নো সমস্যা। সাইজের দিকে তাকালেই আপনি আপনার কাঙ্খিত ড্রাইভ খুঁজে পাবেন। ছবিটির দিকে একবার দেখুনঃ
"
লিনাক্সে ৩ ধরনের পার্টিশন থাকে home,root,swap রুট হল আপনি যেখানে ইন্সটল করবেন । হোম হল আপনি কতটুকু জায়গা ব্যবহার করবেন। এইটার জায়গা যথেষ্ট হলে ভাল । কারণ আপনার সব কাজ এইখানেই জমা হবে । আর swap অনেকটা অতিরিক্ত মেমরীর মত কাজ করে । ধরুন, আপনার ৪জিবি র‍্যাম ব্যবহৃত হল । এর অতিরিক্ত যদি আপনি ব্যবহার করতে চান তাহলে অপারেটিং সিস্টেম হ্যাং হয়ে যাবে । এই জন্য swap ব্যবহার করা হয় । আপনার র‍্যাম যত তার দ্বিগুণ দিলে আপনি খুব ভাল ভাবেই তাহলে লিনাক্স ব্যবহার করতে পারবেন। এইখানে মনে রাখা প্রয়োজন ফাইল সিস্টেম home এবং root এর ext4 হবে আর swap টা swap থাকবে এবং কোন মাউন্ট হবে না । root ফাইলের মাউন্ট চিহ্ন হল / আর home ফাইলের মাউন্ট চিহ্ন হল /home এইটি সব সময় মাথায় রাখবেন। আমার ৩২ জিবি পেনড্রাইভে ইন্সটলের সময় swap ফাইল এর জন্য স্পেস ছিল ৪জিবি । root ফাইলের জন্য ৪ জিবি । বাকী গুলো home ফাইলের জন্য। পার্টিশান নিয়ে আর কোন সমস্যা থাকলে টিউমেন্টে জানাতে ভুলবেন না । এইবার আপনি ইনস্টল দিতে পারেন ।

মনে রাখবেন ইন্সটল দিবার সময় টাইম,ডেইট, উইজারনেইম পাসওয়ার্ড এইগুলা অবশ্যই দিবেন আর চাইলে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক আর ল্যান পরে ম্যানুয়েলি দিতে পারেন ।
সব কিছু ভাল ভাবে শেষ হলে রিস্টার্ট দিন । আর পেনড্রাইভ সরিয়ে ফেলুন । আপনার দেওয়া অপারেটিং সিস্টেমটি সিলেক্ট করুন। উইজারনেইম আর পার্সওয়ার্ড দিন ।

0 comments:

Post a Comment

 
Tricks and Tips